ট্রেড লাইসেন্স

*ট্রেড লাইসেন্স*

[লেখকঃ Daniel Mohammad; এপ্রিল ০৭, ২০১৭ ইং]

স্কুল-কলেজে পড়ার সময় আমাদের স্কুল-কলেজ কর্তৃক একটি আইডি কার্ড প্রদান করা হত যার সাহায্যে আমরা বাসে হাফ ভাড়া থেকে শুরু করে নানা যায়গায় কার্ডটি প্রদর্শনপুর্বক কিছু বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকতাম। একইভাবে চাকরি ক্ষেত্রে এসেও আমরা প্রতিষ্ঠানের এমপ্লয়ী পরিচয়পুর্বক একটি আইডি কার্ড পেয়ে থাকি। কিন্তু ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান পরিচালনার ক্ষেত্রে যেহেতু আমাদের নিজেদের প্রতিষ্ঠান সেক্ষেত্রে আমরা কি করতে পারি? তাদের জন্য প্রাথমিক সমাধান ট্রেড লাইসেন্স।

সুবিধাসমূহঃ

উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি প্রাপ্তি।
ব্যবসায়ের অনুমতি প্রাপ্তি।
কারেন্ট/ব্যবসায়িক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে পারবেন।
বিকাশ/রকেট/ইউ-ক্যাশ/এম-ক্যাশ/শিউর-ক্যাশ এর মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট করতে পারবেন।
ক্রেতার আস্থা লাভ করবেন।
আইনি সুবিধা পাবেন।
বড় ধরণের কাজ/কন্ট্রাক্টের ক্ষেত্রে ট্রেড লাইসেন্স ক্ষেত্র বিষেয়ে কোম্পানী লাইসেন্স অবশ্যই প্রয়োজন।
ব্যাংক লোন প্রাপ্তির জন্য ট্রেড লাইসেন্স অবশ্যই প্রয়োজন।
বিভিন্ন ব্যবসায়িক সমিতির সদস্যপদ প্রাপ্তি। যেমনঃ ই-ক্যাব
ব্যবসায়িক পরিচয়ে টিন লাইসেন্স করতে পারবেন।
ভ্যাট প্রদানের জন্য ট্রেড লাইসেন্স আবশ্যক।

   প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসঃ

ন্যাশনাল আইডি কার্ড (ইন্টারনেট থেকে প্রাপ্ত প্রভিশনাল কপিতেও হবে)।
৩ কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি। যদি অংশীদারী ব্যবসায় হয়ে থাকে তবে সকল অংশীদারের তিন কপি করে পাসপোর্ট সাইজ ছবি।
যদি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের অফিসের মালিকানা আপনার হয়ে থাকে তবে সিটিকর বা পৌরকর এর কপি অথবা বাড়ির বা দোকানের মালিকের সাথে সম্পাদিত আপনার বা প্রতিষ্ঠানের নামে সম্পাদিত ভাড়ার চুক্তিপত্র।
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ঠিকানার ইউটিলিটি বিল।
খরচ; এটা নির্ভর করবে আপনার প্রতিষ্ঠানের উপর, ২০০ টাকা থেকে শুরু করে প্রায় ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত। যেমনঃ আইটি বা আউটসোর্সিং, সফটওয়ার কোম্পানির,কল সেন্টার এর জন্য ২৬৪৫ টাকা (পৌরসভা), সরবরাহ কোম্পানীর জন্য ১১৫০ টাকা (পৌরসভা)। পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন এবং ইউনিয়ন পরিষদে খরচ কম বেশি হয়ে থাকে।
ব্যাতিক্রমঃ যদি আপনার প্রতিষ্ঠান অস্ত্র-গোলা-বারুদ, ম্যানুফ্যাকচারিং, ক্যামিকেল,ফার্নেস, হাসপাতাল,ঔষধ, পরিবহন ইত্যাদির ব্যবসা করে থাকে তাহলে এসবের জন্য সুনির্দিষ্ট মন্ত্রনালয়ের অনুমতিপত্র।

     আবেদনপত্র জমাদানঃ

সকল কাগজপত্র নিয়ে আপনার এলাকার সুনির্দিষ্ট অফিসে চলে যাবেন, মেট্রো সিটিতে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভায় পৌর কতৃপক্ষ আর গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদ ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করে থাকে।
সিটি কর্পোরেশন / পৌরসভা / ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রেড লাইসেন্সের ফর্ম পাবেন বিনামূল্যে। সকল ডকুমেন্ট + ফর্ম ফিল-আপ করে জমা দিবেন। অবশ্যই খেয়াল রাখবেন আপনার হাতের লেখা যেনো পরিস্কার হয়, প্রয়োজনে অন্যকে দিয়ে লিখিয়ে নিন। কারণ সেখানকার কম্পিউটার অপারেটর যদি আপনার হাতের লেখা বুঝতে নাহ পারে তবে সেটি রেখে দিবে এবং এতে করে আপনার ট্রেড লাইসেন্স পেতে দেরি হবে অথবা লেখা না বোঝার কারণে সে যদি ভূল তথ্য দিয়ে আপনার ট্রেড লাইসেন্স করে ফেলে, মাশূল কিন্তু আপনাকেই গুনতে হবে।
আবেদনপত্র সঠিকভাবে জমা দেওয়া হলে আপনার কাজ শেষ। এরপর ২-৩ দিনের মাঝেই আপনার অফিসের লোকেশন ভেরিফিকেশনের জন্য উক্ত অফিস থেকে লোক আসবে। তারা সন্তুষ্ট হয়ে যেলে আপনি সর্বোচ্চ ৫-৬ দিনের সেই কাঙ্ক্ষিত ট্রেড লাইসেন্সটি পেয়ে যাবেন।

     সীমাবদ্ধতাঃ

বর্তমানে ই-কমার্স এর জন্য আলাদা কোন ক্যাটাগরি হয়নি তাই আপনাকে আইটি কোম্পানী হিসেবে নিবন্ধিত হতে হবে।
আপনার একাধিক ঠিকানায় অফিস থাকলে সকল এলাকায় একটি করে ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে।
কোনো তথ্য পরিবর্তনের জন্য এফিডেভিট করে পুনরায় টাকা জমা দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স করাতে হবে।

গুগলে সার্চ করে পাওয়া কিছু ট্রেড লাইসেন্স এর নমুনা 


কোনোরূপ ভূল-ভ্রান্তি করে থাকলে বা আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করা জানাবেন। যদি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লেগে থাকে এবং মনে হয় এর মাধ্যমে আপনার পরিচিত কেউ উপকৃত হবে তবে তা অবশ্যই ফেসবুক , টুইটারসহ অন্যান্য যোগাযোগমাধ্যম গুলোতে শেয়ার করতে ভূলবেন নাহ। 

[বিঃ দ্রঃ আর্টিকেলটি সংগৃহীত]

Comments

Post a Comment