কারেন্ট/বিজনেস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট

*কারেন্ট/বিজনেস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট*
[লেখকঃ Daniel Mohammad, এপ্রিল ১২, ২০১৭ ইং]


ব্যবসায়ী হিসেবে ব্যবসায়িক লেনদেনগুলো করার উত্তম মাধ্যম হলো ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের নামে করা কারেন্ট/বিজনেস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। এই অ্যাকাউন্ট এর থেকে আপনি বিভিন্ন ধরণের উপকারিতা পাবেন যা আপনার ব্যবসায়কে উন্নতির পথে নিয়ে যাবে।

     সুবিধাসমূহঃ
ব্যবসায়িক ব্যাংক লোণের জন্য কারেন্ট/বিজনেস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাধ্যতামূলক।

অগণিত লেন্দেনের সুযোগ।

বড় ধরণের কোম্পানীর থেকে পেমেন্ট গ্রহণ। কারণ সেসকল কোম্পানী হয়তো আপনার নামে চেক ইস্যু নাহ করে আপনার কোম্পানীর নামে চেক ইস্যু করবে।

ইনকাম ট্যাক্সের টাকা পরিষোধের জন্য কারেন্ট/বিজনেস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট দরকার।

ব্যবসায়ী হিসেবে বাহিরের দেশে যাওয়া এবং বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা পেতে কারেন্ট/বিজনেস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে হয়।

     প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসঃ
কোম্পানীর পরিচালনাকারীর ৪-৫ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। (ব্যাংক অনুযায়ী কম-বেশি হতে পারে)

নমিনীর ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।

ইউটিলিটি বিল।

কোম্পানীর পরিচালনাকারীর ন্যাশনাল আইডি কার্ড বা পাসপোর্টের ফটোকপি।

নমিনীর ন্যাশনাল আইডি কার্ড বা পাসপোর্টের ফটোকপি।

ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি। (কিছু ব্যাংক মেইন কপি দেখতে চাইবে)

বাড়ি/অফিস/দোকান ভাড়ার চুক্তিপত্র।

টি.আই.এন. (TIN) এর ফটোকপি।

ইনিশিয়াল ডিপোজিট, যা ১হাজার থেকে ১০হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। কিছু ব্যাংক ৫০হাজার – ১লাখ টাকাও নিয়ে থাকে এবং এর বিপরীতে তারা তাদের কাস্টমারদের কিছু বাড়তি কিছু সুবিধা দিয়ে থাকে।

পরিচয়দানকারী বা ইন্ট্রোডিউসার, এমন একজন ব্যক্তির পরিচিতির দরকার হয়ে থাকে যার ঐ ব্যাংকে কারেন্ট/বিজনেস অ্যাকাউন্ট রয়েছে।

ক্ষেত্র-বিশেষে কিছু ব্যাংক আপনার অফিস/দোকান এর সাইনবোর্ডের সদ্য তোলা ছবি চাইতে পারে।

ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নাম-অংকিত সীলমোহর।

যদি কোম্পানীর মালিক বা পরিচালনা পর্ষদ একের অধিক হয়ে থাকে তবে এই মর্মে সকলের সাক্ষর, যে উক্ত ব্যাংকের উক্ত শাখায় কারেন্ট/বিজনেস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার অনুমতিপত্র এবং যেসকল ব্যাক্তি সেই কারেন্ট/বিজনেস ব্যাংক অ্যাকাউন্টটি পরিচালনা করে থাকবেন তাদের তালিকা, নিয়োগপত্র ও নমুনা স্বাক্ষর।

পার্টনারশীপ ডীড, যদি কোম্পানীর মালিক বা পরিচালনা পর্ষদ একের অধিক হয়ে থাকে।

ক্লাব বা সমিতির ক্ষেত্রে গঠনতন্ত্র ও রেজিষ্ট্রেশন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বিভাগের অনুমোদনপত্র।

এনজিও এর ক্ষেত্রে এনজিও বুর‍্যো হতে লাইসেন্স।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট অফ ইনকর্পোরেশন, মেমোরেন্ডাম অফ অ্যাসোশিয়েশন, আর্টিকেল অফ অ্যাসোশিয়েশন।

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রে  সার্টিফিকেট অফ ইনকর্পোরেশন, মেমোরেন্ডাম অফ অ্যাসোশিয়েশন, আর্টিকেল অফ অ্যাসোশিয়েশন, সার্টিফিকেট অফ কমেন্সমেন্ট অফ বিজনেস, ব্যবসা শুরুর সার্টিফিকেট, হিসাব খোলা ও পরিচালনার জন্য সহ-অংশীদারের যথাযথ অনুমতি ও একাউন্ট পরিচালনাকারীর প্রত্যয়ন পত্র, নির্দিষ্ট ফরমে পরিচালকদের নাম ও ঠিকানা,

     ফর্ম জমাদানঃ
ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে কথা বলে প্রথমেই জেনে নিন আপনি তাদের ব্যাংকে কারেন্ট/বিজনেস অ্যাকাউন্ট খলতে পারবেন কিনা।

পরবর্তীতে ব্যাংক প্রদত্ত ফর্ম; যা কে.ওয়াই.সি. (KYC) ফর্ম নামে পরিচিত তা সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাহায্যে পূরণ করে জমা দিন।

সকল তথ্যের যাচাই করে ব্যাংক আপনাকে ১-২ দিনের মাঝেই আপনার কাঙ্খিত কারেন্ট/বিজনেস  অ্যাকাউন্টটির সকল তথ্য আপনাকে দিয়ে দিবে।

 অন্যান্যঃ
যেহেতু কারেন্ট/বিজনেস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট টি আপনি আপনার ব্যবসার কাজে ব্যবহার করবেন তাই ব্যাংক নির্বাচনের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখবেন, যেমন; সকল বাৎসরিক চার্জ, চেকবইয়ের চার্জ, ইনিশিয়াল ডিপোজিটের পরিমাণ, এ.টি.এম. বুথ এবং ব্রাঞ্চের পরিমাণ, অ্যাকাউন্টের বিপরীতে ডেবিট কার্ড দেওয়া হবে নাকি, যদি দেওয়া হয় তাহলে তার সুবিধাসমূহ, ইন্টারনেট পেমেন্ট গেটওয়ে সার্ভিস আছেন নাকি, এস.এম.এস. সার্ভিস, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সার্ভিস কোয়ালিটী ও অন্যান্য।

কারেন্ট/বিজনেস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হওয়ার কারণে আপনি এই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে জমা টাকার উপর কোনোরূপ সুদ/মুনাফা পাবেন নাহ।

ব্যাংক প্রদও আবেদন ফরম পূরণের সময়  সকল প্রয়োজনীয় কাগজের মূল কপি সাথে রাখবেন।

হিসাব খোলার সময় এবং প্রথমবার চেক বই উঠানোর সময় আপনাকে সরাসরি ব্যাংকে উপস্থিত থাকতে হবে। পরবর্তীতে অন্য কাউকে পাঠিয়ে বাকি কাজগুলো করিয়ে নিতে পারবেন।

আপনার বর্তমান ঠিকানায় ব্যাংক হতে বিভিন্ন চিঠি আসতে পারে তাই এমন একটি ঠিকানা দিন যাতে তারা খুব সহজেই খুঁজে পেতে পারে।

সকল জমাস্লিপ সংরক্ষণ করুণ, পরবর্তীতে হিসাব মেলানোর সময় কাজে দিবে।

ব্যাংকের ডাটাবেইজে আপনার  + ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামের  বানান সঠিকভাবে তোলা হল কিনা চেক করে নিন। যাওদি কোনোরূপ ভূল হয়ে থাকে তবে তা পরবর্তীতে ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

ডেবিট কার্ড নেয়ার জন্য আলাদাভাবে আবেদনের প্রয়োজন থাকলে করে নিন এবং ব্যবহারের সকল নিয়ম জেনে নিন।
[বিঃদ্রঃ আর্টিকেলটি সংগৃহীত]

Comments